স্বদেশ ডেস্ক: প্রতিবছরই বাড়ছে জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা। বাড়ছে পাসকৃত শিক্ষার্থীর সংখ্যা। সেই তুলনায় বাড়ছে না মানসম্মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ও আসন।
এবার অন্য বছরের তুলনায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী অনেক বেড়েছে। তাই এই শিক্ষার্থীদের বড় অংশ পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারবেন না। তাদের অনেককেই ভর্তি হতে হবে সাধারণ কলেজে। এক্ষেত্রে এই কলেজগুলোও ভালো ছাত্র পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।
২০০১ সালে চালু হয় প্রথম জিপিএ পদ্ধতি। প্রথমবার জিপিএ-৫ পান ৭৬ শিক্ষার্থী।
এরপর যথাক্রমে ২০০২ সালে ৩৩০, ২০০৩ সালে ১ হাজার ৩৮৯, ২০০৪ সালে ৮ হাজার ৫৯৭, ২০০৫ সালে ১৫ হাজার ৬৩১, ২০০৬ সালে ২৪ হাজার ৩৮৪, ২০০৭ সালে ২৫ হাজার ৭৩২, ২০০৮ সালে ৪১ হাজার ৯১৭, ২০০৯ সালে ৪৫ হাজার ৯৩৪, ২০১০ সালে ৫২ হাজার ১৩৪, ২০১১ সালে ৬২ হাজার ২৪৪, ২০১২ সালে ৮২ হাজার ২১২, ২০১৩ সালে ৯১ হাজার ১২২, ২০১৪ সালে ১ লাখ ৪২ হাজার ২৭৬, ২০১৫ সালে ১ লাখ ১১ হাজার ৯০১, ২০১৬ সালে ১ লাখ ৯ হাজার ৭৬১, ২০১৭ সালে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৬১, ২০১৮ সালে ১ লাখ ১০ হাজার ৬২৯, ২০১৯ সালে ১ লাখ ৫ হাজার ৫৯৪ এবং সবশেষ ২০২০ সালে ঘোষিত ফলে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন।
এবার মোট শিক্ষার্থী পাস করেছেন ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন। অধ্যয়নের জন্য সিট রয়েছে ২৩ লাখ। ভালো ফল করা শিক্ষার্থীদের পছন্দের ক্ষেত্রে প্রায় দুইশ’র মতো প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এই কলেজগুলোতে আসন রয়েছে প্রায় এক লাখের মতো। ব্যান বেইসের হিসাব অনুযায়ী আগের বছরের পছন্দ তালিকার ১৮৩টি কলেজের মধ্যে ঢাকা বিভাগে ৭৫টি, রংপুর বিভাগে ৩২টি, বরিশাল বিভাগে ১৪টি, রাজশাহী বিভাগে ৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯টি, খুলনা বিভাগে ১৩টি এবং সিলেট বিভাগে ২৩টি। শুধু তাই নয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ফল জিপিএ- ৪ পেয়েছেন ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৯৭২ জন। এই শিক্ষার্থীরাও এই ভালো প্রতিষ্ঠানে নাম লেখানোর প্রতিযোগিতায় নামছেন।
আবার এই সংখ্যা গুনে মেলানো যাবে না হিসাব। কারণ এবারের ফলে জিপিএ-৫ পেয়েছেন অধিকাংশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৫৩১ জন শিক্ষার্থী। ফলে মানসম্মত প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান বিভাগের বাইরের অনেক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ না পেয়েও পাবেন অধ্যয়নের সুযোগ।
করোনার সংক্রমণ এড়াতে ৯ মাস পিছিয়ে যায় ২০২০ সালে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা। তারা তিন বিষয়ে বিশেষ পরীক্ষায় অংশ নেন। রেকর্ড এই ফলের পর কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া দ্রুত করতে চায় সরকার। ৮ই জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে অনলাইন আবেদন। আর ২রা মার্চ শুরু হবে একাদশের ক্লাস।
পাল্লা দিয়ে বাড়ছে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংখ্যা। খুশি অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী সবাই। কিন্তু কলেজে পা রাখতে গিয়ে পড়বেন মহা সংকটে। যদিও সর্বোচ্চ ফলধারী এসব শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের পছন্দের বাইরে থাকা কলেজগুলোও পাবে ভালো করার সুযোগ।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেন, আমরা চেষ্টা করছি সব কলেজকে একটা মানে আনতে। এজন্য কিছু সময়তো লাগবেই। জিপিএ-৫ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে প্রতিযোগিতাও বাড়বে। আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কলেজগুলোকে মানসম্মত করতে পারলে ভবিষ্যতে আর এই সমস্যাগুলো থাকবে না।